বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:০৪ পূর্বাহ্ন
ববি প্রতিনিধি।। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী নওরিন আক্তার উর্মিকে নির্যাতনের অভিযোগে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক সুজিত কুমার বালা’কে আসামী করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ বন্দর থানায় ০৯ মার্চ, সোমবার একটি মামলা দায়ের করেছন নির্যাতিতা শিক্ষার্থীর বাবা এডভোকেট আঃ মন্নান মৃধা।
মামলায় গণিত বিভাগের শিক্ষক সুজিত কুমার বালা’কে প্রধান আসামী করে ৫ জন শিক্ষার্থীসহ মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় যেখানে সাক্ষী হিসেবে ফয়সাল স্যার নামক এক শিক্ষককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আমার ছােট মেয়ে জান্নাতুল নওরিন উর্মি, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়। মেডিকেলে ভর্তির কোচিং করায় ১৬-১৭ ক্লাশ শুরু করে যাহার ইনডেক্স নম্বর 16-MTH সে ১ম বছর পড়াশুনা করে পরীক্ষা অন্তে ২য় বর্ষে উত্তীর্ণ হয়। ঐ পড়াকালীন ২০১৭-২০১৮ সনে সারা বাংলাদেশে কোটা আন্দোলন শুরু হয়। আমার মেয়ে জান্নাতুল নওরিন উর্মি দেশ ব্যাপি কোটা আন্দোলন চলাকালীন সময়ে সে কোটা আন্দোলনে কোটার বিরুদ্ধে ফেইজ বুকে কোটা বাতিলের পক্ষে একটি স্ট্যাটাস দেয়। ঐ সময়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা পক্ষের কিছু ছাত্র তাহাকে গালমন্দ করে। এক পর্যায়ে উর্মির মােবাইল ফোনে তাহাকে মারধর করাসহ হত্যার হুমকি দেয়। আমি অভিভাবক হিসাবে ঐ নাম না জানা নম্বরটিতে ফোন করিয়া নাম জানিতে চাহিলে আমার সাথে গালমন্দ করে। ঐ সময়ে বিমান বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব আনােয়ার হােসেনের সাথে যোগাযোগ করা হইলে হুমকি দাতার নম্বর উল্লেখ করে সাধারণ ডাইরী করা হয়। ঐ ডাইরীর ভিত্তিতে তদন্ত হইলে দেখা যায় আলিম ছালেহীন নামে এক ছাত্রের নাম জানা যায়। ঐ বিষয়ে সাংবাদিকরা পেপারে সংবাদ করতে গিয়া লেখেন যে, ছাত্রলীগ নেতা শিফাত মােল্লার সহযোগী আলিম ছালেহীন ঐ সময়ে হেনা রানী বিশ্বাস, জান্নাতুল নওরনি দের গনিত বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করিতেন। তিনি জিডি করার পরের দিন সন্ধায় আমার মেয়ে নওরিনকে ডেকে নিয়া ২০/২৫ জন ছাত্রলীগ নেতাদের সামনে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। তার উপস্থিতিতে আমার বড় মেয়ে ফাতেমাতুজ যােহরা মিতুকেও অপমান করে এবং জান্নাতুল নওরিনকে চর থাপ্পর মারে। গণিত বিভাগের প্রধান হেনা ম্যাম, ঘােষণা দেন যে তুমি শিবির কর বলিয়া তােমাকে গাজা দিয়া পুলিশ দিয়া ধরাইয়া দিব। তুমি জীবনেও ববি হইতে পাস করিতে পারি না। তােমাকে কেউ বাঁচাতে পারবেনা। ঐ দিনের পর ভয়ে আমার মেয়ে আর ববিতে ক্লাশ করিতে পারে নাই। যে কারণে এক বছর পড়াশুনা প্রায় বন্ধ ছিল। এর পরবর্তী সময়ে ঐ গণিত বিভাগের কয়েকজন অধ্যাপকের দয়ায় ২০১৯ সালের প্রথম দিকে থানায় করা জিডির তদন্ত না করা এবং অভিযােগ না থাকার শর্তে জান্নাতুল নওরিন ক্লাশ শুরু করে নিয়মিত পরীক্ষা দেয়। গণিত বিভাগের অপর এক শিক্ষক জনাব সুজিত কুমার বালা বলেন যে তুমি আবার পড়াশুনা করতে আসছো আমি যতদিন ববিতে আছি তুমি ততদিন পাস করতে পারবে না।
উল্লেখ্য, গত ৮ই মার্চ, রবিবার উক্ত নির্যাতনের ঘটনাকে গুজব ও অপপ্রচার হিসেবে অখ্যায়িত করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি ব্যানারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীবৃন্দ।
Leave a Reply